আনারস সুস্বাদু মৌসুমি ফল। অনেকের কাছে এটি প্রিয়, আবার অনেকে এটি খেতে চান না। তবে আনারসের উপকারিতা জানলে হয়তো তারা সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারেন।
আনারস এক প্রকারের ফল। এর অন্যান্য নাম Pineapple, Anannas, Ananus, Bahunetraphalam, Anamnasam । এর বৈজ্ঞানিক নাম : Ananas comosus (L.) Merr.
মৌসুমী এ ফলটি অসংখ্য গুণে গুনান্বিত। আনারস খেলে যেমন শরীরে পানির চাহিদা মেটানো যায় তেমনি পাওয়া যায় বাড়তি পুষ্টিগুণ। এ পর্বে জেনে নিই আনারসের কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে।
আনারসের উপকারিতা
পুষ্টির অভাব পূরণে আনারসের জুড়ি নেই। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস।
এতে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম থাকে যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। তাই হজমজনিত যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আনারস খাওয়া যেতে পারে।
আনারসে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। জ্বর ও জন্ডিস প্রতিরোধেও আনারস বেশ উপকারী।
নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা এবং ব্রংকাইটিসের বিকল্প ওষুধ হিসেবে আনারস কাজ করে। এই ফলে প্রচুর আঁশ থাকে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ওদিকে এতে কোনো ফ্যাট না থাকায় পরিমিত পরিমাণে আনারসের জুস পান করলে ওজন কমে।
দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় আনারস। ফলে শিরা-ধমনির (রক্তবাহী নালি) মধ্য দিয়ে সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হয়। হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃদপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।
এতে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। এ ছাড়া মাড়ির যেকোনো সমস্যা সমাধানে আনারস কার্যকরী। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জিবানুর আক্রমন কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ ‘ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন’ থেকে রক্ষা পেতে আনারস সাহায্য করে। এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
আনারসে থাকা ক্যালরি আমাদের শক্তির জোগান দেয়। প্রোটিন ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ ত্বকের নানা সমস্যায় আনারস যথেষ্ট কাজ করে।
আনারসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামও থাকে। ক্যালসিয়াম হাড় ক্ষয়ে যাওয়া রোধে কাজ করে। এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। প্রতিদিন খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমান আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোন রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কৃমিনাশক হিসেবেও আনারসের সুনাম আছে। প্রতিদিন সকালে আনারস খেলে কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়।
ফ্রি-রেডিকেল মানবদেহের কোষের ওপর বিরূপ ক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ফলে দেহে ক্যানসার সহ হার্টের নানা রোগ দেখা দেয়। আনারসে আছে উচ্চমাত্রায় পানিতে দ্রবণীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি। এগুলো ফ্রি-রেডিকেল থেকে দেহকে সুরক্ষা প্রদান করে।
আনারস ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারন আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে আনারস বা সালাদ হিসেবে এর ব্যাবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।